
মোঃ মুজাহিদুল ইসলামঃ
গাজীপুর মহানগরীর সদরে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি এবং চাঁদা প্রদান না করায় জমি জবরদখলের চেষ্টা করার অপরাধে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী এক নারী।
গত ৩ মে ২০২৫ ইং দুপুর অনুমান ১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নারী হলেন- মহানগরীর সদর থানার বিলাসপুর এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে ফারজানা জেসমিন তন্নি। অপরদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন- একই এলাকার মৃত ননী গোপাল সাহার ছেলে শ্রী অসীত সাহাসহ তার সহযোগী- হাসেম, মোঃ জাকির আল মামুন, আসাদুজ্জামান সাহেদ, আজমত আলী, ফজলুর রহমান।
জানা যায়, বিলাসপুর মৌজায় ননী গোপাল সাহা ১৯৭৭ সালের ৪ আগস্ট ৬০০৩ নং দলিল মূলে এজমি খরিদ করলে ভুক্তভোগীর বাবা প্রিয়েমশন বা অগ্রক্রয় মিছ ৯৫/৭৭ নং মামলা দায়ের করে। এ মামলায় আদালত ননী গোপালের দলিল বাতিল করে উনার সকল বাধা অপসারণ করে ভুক্তভোগীর বাবার বরাবরে দখল বুঝিয়ে দেন। যার প্রেক্ষিতে ননী গোপাল ১৯৯২ সালের ২২ নভেম্বর মহামান্য হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন ২৫৭০/৯২ নং মামলাটি দায়ের করলে বিচারক মামলাটি খারিজ করার আদেশ প্রদান করেন। এরপর ভুক্তভোগীর বাবা মৃত্যুবরণ করলে ওয়ারিশ সূত্রে উনার ত্যাজ্যবিত্ত আর.এস ৬০৯ নং খতিয়ানের ৬১৫/৮৯৫ নং দাগের ১৮ শতাংশ জমির মালিক হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে আছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ভাড়াটে সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় উক্ত জমি জবর দখল করার লক্ষ্যে দা, ছুরি, লোহার রড, হকিস্টিক, বাঁশের লাঠি ও দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বে-আইনী জনতারদ্ধে এ জমিতে অবস্থিত মার্কেট ও দোকানের ভিতরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে মার্কেট দোকান পাট ভাংচুর করে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। এ সময় ভুক্তভোগী নারীসহ আশপাশে লোকজন প্রতিবাদ করলে সকলের সাথে মারমুখি আচরন করাসহ খুনজখম করার হুমকি প্রদান করে এবং ভুক্তভোগী নারীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। চাঁদা না দিলে মার্কেট ও দোকানপাট ভোগ দখল করতে দিবে না বলে হুমকি প্রদান করে।
ভুক্তভোগী নারী জানান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করলেও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকরী ব্যবস্থা দৃশ্যমান হয়নি। এ কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে ন্যায়বিচার তরান্বিত করতে সহযোগিতা কামনা করেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি শ্রী অসীত সাহা জানান, উনার বাবা এই জমি খরিদ করার পর ভুক্তভোগীর বাবা প্রিয়েমশন বা অগ্রক্রয় মামলা দায়ের করলে উনাদের পক্ষে রায় প্রদান করেন। এই রায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ননী গোপাল সাহা উচ্চ আদালতে সিভিল রিভিশন মামলা দায়ের করে। যার প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত স্থগিতের আদেশ প্রদান করে। ভুক্তভোগী নারীর দায়েরকৃত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উনি তথ্য প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এসংক্রান্তে গাজীপুর আদালতের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রিয়েমশন বা অগ্রক্রয় মামলায় আদালত ভুক্তভোগীর পরিবারকে দখল বুঝিয়ে দেওয়ার পর অভিযুক্ত অসীত সাহার বাবা ১৯৯২ সালে উচ্চ আদালতে সিভিল রিভিশন মামলা দায়ের করার পর আদালত ছয় সপ্তাহের স্থগিতের আদেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে উভয় পক্ষের যুক্তি তর্ক শেষে আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তির বাবার দায়েরকৃত সিভিল রিভিশন মামলাটি খারিজ করার আদেশ প্রদান করেন।
ভুক্তভোগীর দায়েরকৃত অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা জিএমপি সদর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার দ্বীন-ই- আলমের সাথে যোগাযোগ করলে উনি জানান, এ অভিযোগটি তদন্তাধীন। উভয়পক্ষকে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য নোটিশ করা হয়েছে। আইনের ব্যর্থয় হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না
Discussion about this post