
মোঃ মুজাহিদুল ইসলামঃ
২৫ ই আগস্ট ২০২৫ইং তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় (দুদক) এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে গাজীপুরের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার নার্গিস খানমের বিরুদ্ধে ২টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন মো. রফিকুল ইসলাম নামীয় এক ব্যক্তি। অভিযোগে উল্লেখ, তিনি বিভিন্ন ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের টাকা দিয়ে ঢাকার রোড নং-এন/৮, ব্লক নং-এইচ, ইষ্টার্ণ হাউজিং লিঃ, পল্লবী (২য় পর্ব) মিরপুর ১২ নম্বর সেক্টরের অভিজাত এলাকায় একটি বিলাসবহুল ৭তলা ভবন নির্মাণ করেছে এবং তার ইন্টারমেডিয়েট পড়ুয়া ছেলের জন্য কোটি টাকা মুল্যের দামী গাড়ী ক্রয় করেছে যা মাঝেমধ্যে তিনিও ব্যবহার করে থাকেন।
কে এই ডাক্তার নার্গিস? তথ্য সংগ্রহে জানা যায়, তিনি ৫ আগস্ট এর পূর্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার লোক পরিচয়ে ঢাকা বিভাগের নরসিংদী ও গাজীপুরের মত গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোতে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ নিয়েছে এবং বর্তমানে তিনি গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও গাজীপুর জেলায় ভেটেরিনারি অফিসারের শূন্য পদ থাকা সত্যেও সেখানে তিনি উক্ত পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করিতেছে। আওয়ামী দোসরের ক্ষমতায় তিনি ভেটেরিনারি অফিসার শুন্য পদে কাউকে আসতে দেয়নি। সরকারি গাড়ী থাকা সত্বেও তিনি বিভিন্ন ফিড ও মেডিসিন কোম্পানির লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ফিড ও মেডিসিন কোম্পানিদেরকে জিম্বি করে তাদের গাড়ী দিয়ে নিজ বাসা মিরপুরে এবং মিরপুর থেকে গাজীপুর অফিসে আসা-যাওয়া করত। যার ফলে ফিড ও খামারিদের অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করার কারণে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা তার গাজীপুর অফিস একবার ঘেড়াও করেছিল। গাজীপুর খামারিদের অভিযোগ, প্রাণিসম্পদ বিষয়ে কোন পরামর্শ জানতে বা দিক নির্দেশনামুলক কোন কিছু জানতে প্রাণিসম্পদ অফিস, গাজীপুরে আসিলে নার্গিস খানমকে সময়মতো পাওয়া যেত না। সপ্তাহে এক/দুইদিন পাওয়া গেলেও তার সাথে দেখা করা যেত না। ডাক্তার নার্গিস খানম জনগনের সেবক হিসাবে কখনও কাজ করেনি বরং কিভাবে ঘুষ বানিজ্য করে অনৈতিক অর্থ উপার্জন করা যায় সেটিই ছিল তার উদ্দেশ্য। ভুক্তভোগীদের অভিযোগে আরো জানা যায়, ডাক্তার নার্গিস খানম নিয়মিত অফিস না করে তিনি ঢাকায় অবস্থান করতেন এবং অফিসে গিয়ে তার সহকর্মীদেরকে ডাক্তার নার্গিস খানম অফিসে আছেন কিনা জানতে চাহিলে তারা বলতেন স্যার অফিসে নেই। এই সকল অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার নার্গিস খানমের সাথে দেখা করতে আমাদের মিডিয়া টিম গাজীপুর অফিসে একাধিকবার গেলেও তার সাথে দেখা মিলেনি কিন্তু প্রতিবেদকের সাথে কাকতালীয়ভাবে তার গাজীপুর অফিসে দেখা হয়। এবং প্রতিবেদকের নিকট ডাক্তার নার্গিস স্বীকার করেছেন যে মিরপুরের বাড়ীটি তার নিজের নামে রেজিষ্ট্রি করা। তিনি আরও জানান, রফিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে অভিযোগ করিলেও রফিকুলের বিরুদ্ধে আমি কোন অভিযোগ করিব না।
ঢাকা বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. ফরিদা ইয়াসমিনের নিকট অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাহিলে তিনি জানান, এটি মহাপরিচালকের বিষয়। উনি কি ব্যবস্থা নিবেন তিনিই ভাল জানেন এরচেয়ে বেশি কিছু আমি বলতে পারব না। অভিযোগকারী রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি অভিযোগ করার কয়েকদিন পর ডা. নার্গিস খানম তার ব্যবহৃত হোয়ার্টসঅ্যাপ নাম্বারে কয়েকবার ফোন করে অভিযোগকারীর সাথে বসতে চেয়েছিল কিন্তু তিনি বসতে রাজি হয়নি।
চলবে……
Discussion about this post