মোঃ মুজাহিদুল ইসলামঃ
গাজীপুরের টঙ্গীতে চাঁদাবাজি মামলায় গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এড, জিয়াউল হাসান স্বপনকে (জিএস স্বপন) কে গ্রেফতার করেছে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ।
রোববার (৬ জুলাই ২০২৫ ইং ) দুপুর ০২,৩০ মিনিটের সময় দত্তপাড়া দীঘিপাড় এলাকার থেকে তাকে গ্রেফতার করে টঙ্গী পুর্ব থানা পুলিশ। তিনি গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য পদে রয়েছেন। স্বপন গাজীপুর জেলার টঙ্গী পূর্ব থানার দত্তপাড়া গ্রামের মোঃ কফিল উদ্দিন দেওয়ানের ছেলে।
জিয়াউল হাসান স্বপনের গ্রেফতারের খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) আলোচনার ঝড় উঠেছে।
পুলিশ জানায়, স্বপনের নামে পুর্ব থানায় চারটি মামলা রয়েছে। সবগুলোই চাঁদাবাজির মামলা। স্বপন দত্তপাড়া দীঘিরপাড় এলাকায় অবস্থান করছেন এমন সংবাদ পেয়ে ঐ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ ও এলকাবাসি জানায়, জিয়াউল হাসান স্বপন সাবেক বিএনপি নেতা পরিচয়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলায় আসামি করে আদায় করতেন মোটা অংকের টাকা। স্বপনের বিরুদ্ধে ঢাকার বাড্ডা থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দায়ের করা হত্যার চেষ্টা মামলায় আসামি হিসেবে তার নাম রয়েছে। আওয়ামীলীগ সরকারের শাসন আমলে জিয়াউল হাসান স্বপন সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) বেনজির আহমেদের আস্তাভাজন পরিচয়ে দিয়ে চাঁদা আদায় করতেন। তাকে প্রায়ই দেখা যেতো গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সাথে। তবে ছাত্র-জনতার গণঅভুথানের পর তিনি নেমেছেন নতুন কৌশলে। পূর্বের লোকজনদের টার্গেট করে টাকা দাবি করেন স্বপন । টাকা না পেলে ভিন্ন জনকে দিয়ে মামলা করান। সেই মামলায় আসামী হিসেবে নাম ঢুকিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেন। আর টাকা না পেলে আসামীদের নাম মামলা থেকে বাদ দেননি তিনি। মামলার বাদি চেনেনা আসামীদের: গত ৭ এপ্রিল রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় শিলা আক্তার নামে একজন নারী বাদি হয়ে ২৭১জনকে আসামী করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা চেষ্ঠার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামীদের চেনেন কিনা এমন প্রশ্নে শিল্পী আক্তার বলেন, এ বিষয়ে স্বপন ভাইয়ের সাথে কথা বলেন। ঐ মামলায় গাজীপুর মহানগরীর ৫০নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুরাদ হোসেন বকুলকে ১৬৫ নাম্বার আসামী করা হয়। মামলায় তাকে আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে দেখানো হয়েছে। তিনি টঙ্গীর দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক পদে রয়েছেন। মুরাদ হাসেন বকুল বলেন, আমি ৫০নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য। আমি পেশায় একজন দলিল লেখক। কয়েক মাস আগে আমি স্থানীয় আওয়ামীলীগ সমর্থক রশিদ মোল্লা নামে এক নেতার জমি সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করে দেই। এরই জেরে স্বপন আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাব করেন। আমি চাঁদার টাকা না দেওয়ায় গত এপ্রিল মাসে আমাকে আওয়ামীলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলায় আসামী করেন। টাকা দিলে মামলা থেকে আমার নাম বাদ দেবেন বলে জানান। আমি দলের জেষ্ঠ্য নেতাদের বিষয়টি জানিয়েছি।
টঙ্গী পূর্ব থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফরিদুল ইসলাম বলেন, স্বপনের বিরুদ্ধে থানায় চারটি চাঁদাবাজির মামলায় রয়েছে। তবে চারটির মামলার মধ্যে একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।মামলা নম্বর ৩১, তারিখ ১৪/০৫/২৫। চারটি মামলার মধ্যে দুইটি মামলার জামিনে রয়েছে শুনেছি। তার বিরুদ্ধে অন্য থানায় মামলা আছে কি না তা খতিয়ে দেখে তাকে সোমবার আদালতে পাঠানো হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ জাহাঙ্গীর আলম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত