নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর ডিমলায় "গ্রামীণ কুটির শিল্প মেলা-২০২৫"–এর নামে অবৈধভাবে লটারির টিকিট বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
জানা গেছে, ডিমলা সদর, সর্দারহাট, নাউতারা ও ডাঙ্গারহাটসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে লটারির টিকিট বিক্রি করা হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তারের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে ডিমলা সদর ইউনিয়নের উত্তর তিতপাড়া গ্রামের মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে মো. আব্দুল লতিফকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়াও পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার কুড়ালি পাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন এবং ডিমলা উপজেলার খগাখরিবাড়ি ইউনিয়নের আব্দুল জব্বারের ছেলে সাগর ইসলামকে তিন দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার বলেন, “সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করে লটারির টিকিট বিক্রি করা এক ধরনের প্রতারণা। এটি একটি আইনবিরুদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ অনুযায়ী দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ১৮৮ ধারায় এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
অভিযানকালে লটারি বিক্রির কাজে ব্যবহৃত ১১টি বাক্স ও বিপুল পরিমাণ অবিক্রিত লটারির টিকিট জব্দ করা হয়। তিনি আরও জানান, জনস্বার্থে এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এই অভিযান স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ও সন্তুষ্টি সৃষ্টি করেছে। ডাঙ্গারহাট এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, “এই লটারির কারণে অনেক গরিব মানুষ প্রতারিত হচ্ছিল। প্রশাসনের এই পদক্ষেপ প্রশংসনীয়।” নাউতারা বাজারের ব্যবসায়ী আলী আহমেদ বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ লটারি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। অবশেষে প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে, এতে আমরা খুশি। আশা করি, ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।”
স্থানীয় অনেক অভিভাবকও প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, লটারির ফাঁদে পড়ে উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা বিপথে যাচ্ছিল এবং পড়াশোনায় মনোযোগ হারাচ্ছিল। এই অভিযান তাদের জন্য একপ্রকার স্বস্তির বার্তা হয়ে এসেছে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ জাহাঙ্গীর আলম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত